Bangladesh-fish-hospital

বাংলাদেশ মৎস্য হাসপাতাল

Bangladesh Fish Hospital

Since 2016

মাছ চাষীদের পাশে থেকে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে নিরলসভাবে কাজ করছে
বাংলাদেণ মৎস্য হাসপাতাল-

বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ এবং কৃষির একটা বড় অংশ দখল করে আছে মৎস্য
চাষ। আমরা মাছে-ভাতে বাঙ্গালি, মাছ ছাড়া বাঙ্গালির অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না।
বাংলাদেশের পুকুর, নদী, খাল, বিল, হাওড়, বাওড় সহ বিভিন্ন জলাশয়ে ব্যাপকভাবে মাছ
চাষ হয় এমনকি বর্তমানে ঘরের ছাদে বা ঘেরা জায়গায় বায়োফ্লক, হাই-ডেনসিটি এবং
আর এ এস পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু হয়েছে। ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ মাছ চাষে বিশ্বে রোল
মডেল হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ, মৎস্য
সেক্টরের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত থেকে এদেশের কয়েক কোটি মানুষ জীবিকা
নির্বাহ করছে। মাছ চাষ অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসা হলেও অভিজ্ঞতার অভাব,
রোগবালাই, সঠিক দিক নির্দেশনার অভাব ও প্রকৃতির বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণে মাছ
চাষীদের অনেক সময় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় যা মৎস্য সেক্টর তথা দেশের
অর্থনীতিতে বড় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মাছ চাষীদের পাশে থেকে তাদেরকে মাছ
চাষের আধুনিক কলাকৌশল সংক্রান্ত সঠিক দিক নির্দেশনা দেওয়া, মাছের রোগ বালাই
নিরসনে সহযোগিতা করা, মাছের মড়ক দেখা দিলে মাছের মড়কের উৎকৃষ্ট কারণ খুঁজে
বের করা এবং তার সমাধান দেওয়াসহ মৎস্য চাষ ও মৎস্য চাষের সাথে সংশ্লিষ্ট

বিভিন্ন প্রকার তথ্য দিয়ে দেশের মাছ চাষীদের সহযোগিতা করে কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন পেতে এবং

ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে বাংলাদেশ মৎস্য হাসপাতাল নামক সংস্থাটি ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
সংগঠনটির স্লোগান হলো-” মাছ আপনার সেবার দায়িত্ব আমাদের” মাছ চাষীদের
আধুনিক কলাকৌশল, সঠিক নির্দেশনা প্রদান, মাছের রোগ বালাই নিরসন, মাছের মড়ক
দেখা দিলে তার কারণ শনাক্ত করে সমাধান দেওয়াসহ মাছ চাষ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্য
দিয়ে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ মৎস্য হাসপাতাল। বর্তমানে পুকুর, নদী, খাল, বিল,
হাওড়- বাওড় সহ বিভিন্ন জলাশয়ে মাছ চাষ হয় এমনকি ঘরের ছাদে বা ঘেরা জায়গায়
বায়োফ্লক, হাই-ডেনসিটি এবং আর এ এস পদ্ধতিতে মাছ চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘অভিজ্ঞতার অভাব, রোগবালাই এবং সঠিক দিক নির্দেশনা
সম্পর্কে না জানা, প্রকৃতির বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণে মাছ চাষীদের অনেক সময়
ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। ফলে উৎপাদন হ্রাস পায়। বাংলাদেশ মৎস্য হাসপাতালের
প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মো.
মাসুদ রানা। উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, মৎস্য
অধিদপ্তর ও মৎস্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উর্ধতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন বেসরকারি

প্রশিক্ষন প্রদান সহ দেশের মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে সরকার প্রদত্ত যেকোন
কর্মকান্ড বাস্তবায়নে সগৌরবে অংশগ্রহণ করা বাংলাদেশ মৎস্য হাসপাতালের
উল্লেখযোগ্য কাজ। আমাদের উপজেলা প্রতিনিধিরা নিয়মিতভাবে মাছ চাষীদের পুকুর ও

জলাশয়ের পানি পরীক্ষা করে আধুনিক চিকিৎসা ও পরামর্শ প্রদান করেন। বায়োফ্লক,
হাইডেনসিটি, আরএএস সহ যাবতীয় আধুনিক মাছ চাষ বিষয়ে আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ ও
পরামর্শ প্রদান করি। সামাজিক যোগাযোগ ও হটলাইন সার্ভিসের মাধ্যমে চাষীদের ২৪
ঘন্টা সেবা চালু রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মাছের রোগ নির্ণয় ও নিরাময় সংক্রান্ত
বিষয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে গবেষণা পরিচালনাকরণ,
মৎস্য ঔষধ উৎপাদনকারী সংস্থা ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সহায়তায় ক্ষুদ্র
দুঃস্থ মাছ চাষীদের মাঝে মাছের পোনা বিতরণ করা হয়। মাছ চাষীদের মেধাবী
সন্তানদের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সহায়তায় উচ্চশিক্ষায় বৃত্তির ব্যবস্থা করা
হয়।’ মৎস্য হাসপাতাল থেকে সেবা পাওয়া একাধিক মাছ চাষীরা বলেন, ‘আমরা
যেকোনো সমস্যায় মৎস্য হাসপাতালের প্রতিনিধিদের পাশে পাই। তারা পরামর্শ ও
প্রশিক্ষণ দিয়ে আমাদের সাহায্য করে। মাছের রোগ চিহ্নিত করে চিকিৎসা দেয়। ফলে
আমাদের ভোগান্তি অনেক অংশে কমছে।’ বর্তমানে রাজশাহী বিভাগ (নাটোর, নওগা,
বগুড়া, জয়পুরহাট), ঢাকা বিভাগ (গাজীপুর, মানিকগঞ্জ), ময়মনসিংহ বিভাগ (ময়মনসিংহ
সদর, নেত্রকোনা, জামালপুর), রংপুর বিভাগ (রংপুর সদর, দিনাজপুর) এবং চট্টগ্রাম
বিভাগের ফেনী জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মোট ৬৮ টি সার্ভিস বুথ চালু রয়েছে। সরকারি-
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে আসলে বাংলাদেশ মৎস্য হাসপাতাল তাদের
কার্যক্রমের পরিধি আরও বাড়াতে পারবে এবং জাতীয় অর্থনিতীতে ভূমিকা রাখতে
পারবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। রাজশাহী বিভাগের নাটোর, নওগা, বগুড়া,
জয়পুরহাট জেলায়-৩৫ টি ইউনিয়নে ৩০ টি সার্ভিস বুথ, ঢাকা বিভাগের গাজীপুর, ঢাকা
ও মানিকগন্জ এর ১৫ টি ইউনিয়নে ১৫ টি, ময়মনসিংহ বিভাগের সদর, নেত্রকোনা ও
জামালপুর জেলার ১২ টি ইউনিয়নে ১২ টি, রংপুর বিভাগের সদর ও দিনাজপুরে জেলায় ৮
টি ও চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী জেলায় ৩ টি সার্ভিস বুথ।